DNC Health Hub.
#

চিরস্থায়ী রাসায়নিক (Forever Chemical) : ভবিষ্যৎ স্বাস্থ্য বিপত্তি ।

May 15 2025 12:00AM
চিরস্থায়ী রাসায়নিক (Forever Chemicals): স্বাস্থ্যের উপর  প্রভাব এবং  চিকিৎসা পদক্ষেপ
(Health impacts & Clinical Interventions)
 
পার- ও পলিফ্লুরোঅ্যালকাইল পদার্থ (PFAS) এক বিশেষ রাসায়নিক পদার্থ যা মূলত চিরস্থায়ী রাসায়নিক বা “Forever Chemicals” নামে পরিচিত। এগুলো জল , তেল ও তাপ প্রতিরোধী হওয়ায় বিভিন্ন শিল্পপণ্য যেমন- ননস্টিক কুকওয়্যার, ফাস্ট ফুড প্যাকেট, আগুন নির্বাপক ফোম , টেক্সটাইল পণ্য প্রভৃতি তৈরীর কাজে ব্যবহৃত হয়।  এগুলো পরিবেশে বছরের পর বছর অপরিবর্তিত অবস্থায় থেকে যায় । এছাড়াও আমাদের শরীরে একবার প্রবেশ করলে দীর্ঘকাল ধরে শরীরের মধ্যে থেকে যায় এবং সহজে ভাঙে না। সে কারণেই এদের এরকম বিশেষ নামকরণ।
 
স্বাস্থ্যের উপর এর প্রভাব:
চিরস্থায়ী রাসায়নিক শরীরে দীর্ঘকাল ধরে জমে থেকে বিভিন্ন ধরনের স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করে, যেমন:
 
 হরমোনের ভারসাম্যহীনতা: এই রাসায়নিক থাইরয়েড হরমোনের কার্যক্রমে ব্যাঘাত ঘটায়।
 ইমিউন সিস্টেমে দুর্বলতা সৃষ্টি: এই রাসায়নিক এর প্রভাবে শরীরের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা হ্রাস পায়, ফলে সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ে।
 ক্যান্সার: কিডনি ও টেস্টিকুলার ক্যান্সারের সাথে এই রাসায়নিকের এর সরাসরি সম্পর্ক প্রমাণিত হয়েছে ।
 জন্মগত সমস্যা ও বন্ধ্যাত্ব: এই রাসায়নিক গর্ভাবস্থায় শিশুর কম ওজন ও নারীর বন্ধ্যাত্বের জন্য দায়ী বলে অনুমান করা হয়।
 লিভার ও কিডনির ক্ষতি: এই ক্ষতিকারক রাসায়নিক লিভার এনজাইমের পরিবর্তন ঘটায় ও কিডনির কার্যকারিতা হ্রাস করে।
 
চিকিৎসাগত পদক্ষেপ ও প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা:
কতগুলো গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ শরীরের উপর এই ক্ষতিকারক রাসায়নিক এর কুপ্রভাব প্রতিহত করতে সাহায্য করে, যেমন-
 
 রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে PFAS শনাক্তকরণ: যদিও এটি সাধারণ পরীক্ষা নয়, তবে উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ রোগীদের ক্ষেত্রে এই পরীক্ষা করা যেতে পারে।
 লিভার ও কিডনি সাপোর্ট: হেপাটোপ্রটেকটিভ ও কিডনি ফাংশন বুস্টার সম্বন্ধীয় হোমিওপ্যাথিক ওষুধ অত্যন্ত কার্যকরী ভূমিকা নিতে পারে ।
 জীবনধারা পরিবর্তন: আমাদের দৈনন্দিন জীবনধারায়  কিছু পরিবর্তন অত্যন্ত আবশ্যক যেমন 
► PFAS মুক্ত পণ্য ব্যবহার।
► বিশুদ্ধ জলের ব্যবহার (অ্যাক্টিভেটেড কার্বন ফিল্টার বা রিভার্স অসমোসিস এর মাধ্যমে) ।
► যতটা সম্ভব প্রাকৃতিক খাদ্য গ্রহণ এবং প্রক্রিয়াজাত খাদ্য এড়িয়ে চলা ইত্যাদি । 
 নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা: যাদের শরীরে PFAS-এর উপস্থিতি ধরা পড়েছে, তাদের নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা জরুরি।
 
উপসংহার:
চিরস্থায়ী রাসায়নিক এক নিরব বিপদ। সচেতনতা, জীবনধারায় পরিবর্তন এবং প্রয়োজনীয় চিকিৎসা গ্রহণের মাধ্যমে আমরা এর ক্ষতিকর প্রভাব থেকে নিজেদের ও আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে রক্ষা করতে পারি।
 
 
প্রবন্ধ পরিবেশনায়,  ডি এন সি একাডেমি
সম্পাদনায়,ডাক্তার সৌমাল্য চট্টোপাধ্যায়।