DNC Health Hub.
#

পলিসিস্টিক ওভারিয়ান রোগ (PCOD)

#শরীরের বিভিন্ন জায়গায় অতিরিক্ত লোম,#অনিয়মিত মাসিক,#মাসিকের সময় পেটে যন্ত্রণা,# বন্ধ্যাত্ব,# মুখে ব্রোণ,# শরীরের স্থুলতা ।
পলিসিস্টিক ওভারিয়ান ডিজিজ (PCOD): এক নজরে বিশ্লেষণ
 
সাধারণ ধারণা :
PCOD হল একটি হরমোনজনিত অসুখ, যা প্রজননক্ষম মহিলাদের মধ্যে দেখা যায়। এক্ষেত্রে হরমোনের ভারসাম্যহীনতার কারণে ডিম্বাশয়ে একাধিক ছোট ছোট সিস্ট তৈরি হয় । এই রোগের ফলে অনিয়মিত মাসিক চক্র, বন্ধ্যাত্ব এবং মেটাবলিক সমস্যা ইত্যাদি তৈরি হয়।
 
প্যাথোফিজিওলজি (রোগের কার্যপ্রণালী ):
এই রোগে ডিম্বাশয় থেকে অতিরিক্ত পুরুষ হরমোন (অ্যান্ড্রোজেন) নিঃসরণ হয়, যা ডিম্বাণু উৎপাদনে বাধাসৃষ্টি করে। এছাড়াও এই রোগে ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স দেখা দেয়, যার ফলে শরীরে ইনসুলিন এর মাত্রা বেড়ে যায়, যা আবার পজিটিভ ফিডব্যাক সিস্টেম এর মাধ্যমে রক্তে অ্যান্ড্রোজেন এর মাত্রা কে আরও বাড়িয়ে তোলে।
 
রোগের লক্ষণ:
 
 
 
 
 
 
 
♦ অনিয়মিত বা অনুপস্থিত মাসিক
♦ মুখে ও শরীরে অতিরিক্ত লোম (হিরসুটিজম)
♦ ব্রণ ও ত্বকের অতিরিক্ত তেলা ভাব
♦ ওজন বৃদ্ধি (বিশেষত পেটে)
♦ মাথার চুল পড়া
♦ সন্তান ধারণে সমস্যা
♦ খিটখিটে মেজাজ, অবসাদ ইত্যাদি
 
রোগের জটিলতা:
এই রোগে আক্রান্ত মহিলাদের ক্ষেত্রে কতগুলো দীর্ঘকালীন সমস্যা দেখা দেয় যেমন
 
♦ টাইপ ২ ডায়াবেটিস
♦ উচ্চ রক্তচাপ ও হৃদরোগ
♦ গর্ভধারণজনিত জটিলতা
♦ বন্ধ্যাত্ব
♦ অস্বাভাবিক জরায়ুর সমস্যা, এমনকি ক্যান্সার
♦ স্লিপ অ্যাপনিয়া ইত্যাদি
 
সাম্প্রতিক গবেষণা তথ্য:
ভারতের প্রতি ৫ জন মহিলার মধ্যে ১ জন PCOD রোগে আক্রান্ত। গবেষণায় দেখা গেছে যে শরীরের মধ্যে  ক্রনিক ইনফ্ল্যামেশন,  গাট মাইক্রোবায়োমের ( খাদ্যনালির জীবাণু বৈচিত্র) ভারসাম্যহীনতা এবং হরমোনবিকৃত রাসায়নিকের (endocrine-disrupting chemicals ) উপস্থিতি PCOD-এর ঝুঁকি বাড়ায়।
 
রোগ নির্ণয়(ডায়াগনস্টিক) পদ্ধতি:
রোটারড্যাম মানদণ্ড অনুযায়ী নীচের ৩ টি উপসর্গের মধ্যে যেকোনো ২টি উপসর্গ উপস্থিত থাকলে PCOD রোগ নির্ণয় করা যায়:
 
 
1. অনিয়মিত ডিম্বস্ফুটন
2. শরীরে অতিরিক্ত মাত্রায় অ্যান্ড্রোজেনের উপস্থিতি
3. পেলভিক আল্ট্রাসাউন্ডে ( USG) পলিসিস্টিক ওভারির উপস্থিতি
 
এছাড়াও অন্যান্য পরীক্ষা গুলি হল :
 
► রক্তে LH, FSH, টেস্টোস্টেরন এর মাত্রা নির্ধারণ
► ইনসুলিন ও গ্লুকোজ এর মাত্রা নির্ধারণ এবং
► থাইরয়েড ফাংশন টেস্ট 
 
উপসংহার:
 
 
 
 
 
 
 
PCOD দীর্ঘমেয়াদি সমস্যা হলেও সঠিক খাদ্যাভ্যাস, নিয়মিত ব্যায়াম, মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণ ও চিকিৎসার মাধ্যমে তা নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব। আগেভাগে শনাক্ত করা গেলে জটিলতা অনেকটাই কমানো যায়। হোমিওপ্যাথি এই রোগের ক্ষেত্রে অত্যন্ত সফল এক চিকিৎসা পদ্ধতি। আধুনিক এবং বিজ্ঞানভিত্তিক হোমিওপ্যাথিক ওষুধের প্রয়োগ এই রোগের লক্ষণ গুলিকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে এবং সামগ্রিকভাবে এই রোগে আক্রান্ত মহিলাদের জীবন যাপনে আমূল পরিবর্তন আনতে পারে।
 
 
 
প্রবন্ধ পরিবেশনায়,  ডি এন সি একাডেমি
সম্পাদনায়,ডাক্তার সৌমাল্য চট্টোপাধ্যায়।