DNC Health Hub.
#

রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস

#গাঁটের ব্যথা,# গাঁটের জড়তা,# গাঁটের যন্ত্রণা,# গাঁট ফুলে যাওয়া ,# গাঁট বেঁকে যাওয়া।।
রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস (Rheumatoid Arthritis): এক নজরে বিশ্লেষণ
 
পরিচিতি (Overview):
রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস (RA) একটি সিস্টেমিক অটোইমিউন রোগ । এই রোগের ক্ষেত্রে শরীরের ইমিউন সিস্টেম তার নিজের শরীরের  জয়েন্ট টিস্যুকেই আক্রমণ করে বসে। এটি সাধারণত হাত, কাঁধ, হাঁটু ইত্যাদি  জয়েন্টগুলিতে বেশি প্রভাব ফেলে। পুরুষদের তুলনায় মহিলারাই এই রোগে বেশি আক্রান্ত হন । বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ৩০-৫০ বছর বয়সে এই রোগের লক্ষণগুলো ধীরে ধীরে প্রকাশ পায়।
 
প্যাথোফিজিওলজি (Pathophysiology):
RA-তে ইমিউন সিস্টেম সাইনোভিয়াল মেমব্রেনে প্রদাহ সৃষ্টি করে, যার ফলে জয়েন্ট গুলো ফুলে যায়, ব্যথা করে এবং ধীরে ধীরে জয়েন্টের কার্টিলেজ ও হাড় ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সাইটোকাইন, TNF-α ও IL-6 জাতীয় রাসায়নিক এই প্রদাহজনিত প্রতিক্রিয়ায় মুখ্য ভূমিকা পালন করে।
 
লক্ষণ (Signs and Symptoms):
 
 
♦ সকালে দীর্ঘক্ষণ গাঁটের জড়তা।
♦ জয়েন্ট ফুলে যাওয়া ও ব্যথা হওয়া।
♦ ক্লান্তি ও তার সঙ্গে সময় সময় হালকা জ্বর।
♦ হাতের আঙ্গুল ও কবজির দুই পাশে সমানভাবে ব্যথা।
♦ সময়ের সঙ্গে সঙ্গে জয়েন্ট এর বিকৃতি ইত্যাদি ।
 
নির্ণয় পদ্ধতি (Diagnostic Approach):
 
 
⇒ রোগের লক্ষণ দেখে প্রাথমিকভাবে এই রোগ সম্বন্ধে একটা ধারণা তৈরি করা ।
⇒ রক্তে Rheumatoid Factor (RF) ও Anti-CCP অ্যান্টিবডি পরীক্ষা।
⇒ ESR ও CRP দ্বারা প্রদাহের মাত্রা নির্ধারণ।
⇒ এক্স-রে বা আলট্রাসোনোগ্রাফি দ্বারা জয়েন্টের পরিবর্তন পর্যবেক্ষণ করা, ইত্যাদি।
 
জটিলতা (Complications):
►  জয়েন্ট স্থায়ীভাবে বিকৃত হওয়া।
►  ফুসফুস, হৃদপিণ্ড, ত্বক ও চোখের প্রদাহ।
►  রিউমাটয়েড নডিউল।
►  অ্যানিমিয়া ও অস্টিওপোরোসিস ।
 ফেল্টির সিন্ড্রোম (Felty's Syndrome) : দীর্ঘকালীন রোগ ভোগের কারণে প্লীহার আকার বৃদ্ধি এবং নিউট্রোফিলের সংখ্যা কমে যাওয়া,ইত্যাদি।
 
সাম্প্রতিক গবেষণা তথ্য (Recent Research Data):
বর্তমান তথ্য অনুযায়ী, ভারতের প্রায় ০.৫% প্রাপ্তবয়স্ক RA-তে আক্রান্ত। জেনেটিক মার্কার (HLA-DR4) শনাক্ত করে ঝুঁকিপূর্ণ ব্যক্তিদের আগেই চিহ্নিত করা সম্ভব হচ্ছে। আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞানের স্টেরয়েড বা নন স্টেরয়েড অ্যান্টি ইনফ্লামেটরি ড্রাগ (NSAIDs), এই সমস্ত ওষুধগুলি কার্যকরী হলেও খুব বেশি পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার ঝুঁকি থাকার জন্য দীর্ঘকালীন ব্যবহারের পক্ষে মোটেই উপযুক্ত না। অন্যদিকে জেনেটিক সিগন্যালিং সম্বন্ধে আধুনিক গবেষণা এবং সেই অনুযায়ী অগমেন্টেড হোমিওপ্যাথির উপযুক্ত ব্যবহার এই রোগের উপসর্গগুলিকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে ভীষণভাবে সাহায্য করছে।
 
উপসংহার (Conclusion):
 
 
রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস একটি দীর্ঘস্থায়ী রোগ হলেও সময়মতো সঠিক চিকিৎসা ও জীবনযাত্রার পরিবর্তনের মাধ্যমে রোগী দীর্ঘকাল স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারেন।  প্রাথমিক পর্যায়ে রোগ নির্ণয় এবং অগমেন্টেড হোমিওপ্যাথির সাফল্য রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস রোগের চিকিৎসা কে অনেক নির্ভরযোগ্য, পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াহীন এবং গ্রহণযোগ্য করে তুলেছে।
 
প্রবন্ধ পরিবেশনায়,  ডি এন সি একাডেমি
সম্পাদনায়,ডাক্তার সৌমাল্য চট্টোপাধ্যায়।