DNC Health Hub.
#

নন অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার

#পেটে ব্যাথা,# পেট ভার,# খাবারে অনীহা,# অযথা ক্লান্তি,# জন্ডিস।।
নন অ্যালকোহলিক ফ্যাটি  লিভার (Non Alcoholic Fatty Liver):এক নজরে বিশ্লেষণ
 
পরিচিতি (Overview):
ফ্যাটি লিভার রোগ একটি সাধারণ যকৃতজনিত রোগ, যেখানে যকৃতে স্বাভাবিকের থেকে অতিরিক্ত মাত্রায় চর্বি জমে যায়। সাধারণভাবে দুই ধরনের ফ্যাটি লিভার রোগ দেখা যায়  — অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার ডিজিজ (AFLD) ও নন-অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার ডিজিজ (NAFLD)। সময় মতো চিকিৎসা করানো না হলে এই রোগ পরবর্তী ক্ষেত্রে লিভার সিরোসিস বা লিভার ক্যান্সারের মতো সাংঘাতিক রোগে পরিণত হতে পারে।
 
প্যাথোফিজিওলজি (Pathophysiology):
যখন আমরা অতিরিক্ত মাত্রায় চর্বি জাতীয় খাবার গ্রহণ করি, তখন সেই চর্বি শরীরের অন্যান্য অংশের সাথে সাথে যকৃতের মধ্যেও সঞ্চিত হতে থাকে। এই অতিরিক্ত ফ্যাট ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স, মেটাবলিক সিনড্রোম, এবং অক্সিডেটিভ স্ট্রেসের মাধ্যমে লিভার কোষের মধ্যে ক্রনিক প্রদাহ সৃষ্টি করে ও ধীরে ধীরে লিভারের কোষ গুলিকে নষ্ট করে ফেলে। এই ভাবেই লিভারের ফ্যাটি ডিজাইনারেশন সংগঠিত হয়।
 
রোগের লক্ষণসমূহ (Signs and Symptoms):
 
 
প্রাথমিক অবস্থায় এই রোগের সাধারণত কোনো উপসর্গ থাকে না। তবে ধীরে ধীরে কতগুলি লক্ষণ প্রকাশ পেতে থাকে, যেমন:-
► অল্প পরিশ্রমে ক্লান্ত হয়ে যাওয়া।
► হঠাৎ হঠাৎ পেটের ডান দিকে ব্যথা হওয়া।
► শরীরের ওজন হঠাৎ বেড়ে যাওয়া বা কমে যাওয়া।
► মাঝে মাঝে হালকা জ্বর দেখা দেওয়া ইত্যাদি।
► রোগ বাড়াবাড়ি পর্যায়ে গেলে চোখের সাদা অংশ অথবা গায়ের চামড়া হলুদ হয়ে যেতে পারে, অর্থাৎ জন্ডিস দেখা দিতে পারে।
 
রোগ নির্ণয় পদ্ধতি (Diagnostic Approach):
 
 
রোগ নির্ণয়ের জন্য রক্ত পরীক্ষা একটা গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ:-
♦ এক্ষেত্রে লিভার ফাংশন পরীক্ষা(LFT) করা হয়ে থাকে।
♦ এছাড়াও আলট্রাসাউন্ড, সিটি স্ক্যান বা ফাইব্রোস্ক্যান করা হয়।
♦ প্রয়োজনে লিভার বায়োপসি করা যেতে পারে।
 
জটিলতা (Complications):
নন অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার ডিজিজ (NAFLD) কখনো কখনো এর পরিবর্তিত রূপ, অর্থাৎ নন অ্যালকোহলিক স্টিয়াটোহেপাটাইটিস (NASH ) এ রূপান্তরিত হতে পারে, যা পরবর্তী ক্ষেত্রে লিভার সিরোসিস, লিভার ফেইলিওর, এমনকি লিভার ক্যান্সারেরও কারণ হতে পারে।
 
কখন ডাক্তার দেখাবেন ?
যখন শরীরে অতিরিক্ত ক্লান্তি অনুভূত হয়, প্রায়শই ডান পেটের ওপর দিকটায় ব্যথা হতে থাকে, চোখ বা চামড়া হলুদ হয়ে যায়, বা রক্ত পরীক্ষায় SGPT, SGOT, অ্যালকালাইন ফসফাটেজ (Alkaline Phosphates) এর মত লিভার উৎসেচক এর মাত্রা বেড়ে যায়, তখনই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
 
সাম্প্রতিক গবেষণা তথ্য (Recent Research Data):
বর্তমানে ভারতের শহরাঞ্চলে প্রায় ৩০%-৪০% মানুষের মধ্যে NAFLD পাওয়া যাচ্ছে। মোটা হওয়া, ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স ও ডায়াবেটিস এর মূল কারণ। স্বাস্থ্য সচেতনতা বাড়ানো একটা খুব কার্যকরী পদক্ষেপ হতে পারে। সাম্প্রতিক তথ্য অনুযায়ী ফ্যাট মেটাবলিজিম রেগুলেশন, সেল ডেথ রেগুলেশন এবং ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স মডিফিকেশন এর ক্ষেত্রে অগমেন্টেড হোমিওপ্যাথি এক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। তাই জীবন শৈলী পরিবর্তনের সাথে সাথে হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা একটা কার্যকরী চিকিৎসা পদ্ধতি হিসেবে উঠে আসছে।
 
উপসংহার (Conclusion):
 
 
নন অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার রোগ এক নীরব ঘাতক। সঠিক ডায়েট, নিয়মিত ব্যায়াম, এবং ওজন নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে এটি প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। সময়মতো পরীক্ষা ও সঠিক হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা করলে এই রোগের জটিলতা এড়ানো যেতে পারে। তাই সুস্থ থাকুন, ভরসা রাখুন, সঙ্গে রাখুন হোমিওপ্যাথি।।
 
প্রবন্ধ পরিবেশনায়,  ডি এন সি একাডেমি
সম্পাদনায়,ডাক্তার সৌমাল্য চট্টোপাধ্যায়।